হরতালে স্থবির মোংলা

নিজস্ব প্রতিবেদক ও মোংলা প্রতিনিধি

বাগেরহাট জেলার সাবেক ৪ টি সংসদীয় আসন পুর্নবহালের দাবিতে টানা ৪৮ ঘন্টা হরতালে স্থবির হয়ে পড়েছে মোংলা সমুদ্র বন্দর। বুধ ও বৃহষ্পতিবারের হরতালে বন্দর থেকে নৌপথে পন্য বহন বন্ধ রয়েছে। স্থাবির হয়ে পরে ইপিজেড, ইকোনমিক জোনের শিল্প প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম।

সর্ব দলীয় সম্মিলিত কমিটির ৫দিনের কর্মসুচির শেষের দুই দিন টানা হরতাল-অবরোধ শেষ হয়েছে গতকাল বৃহষ্পতিবার। এতে স্থাবির হয়ে পড়ে মোংলা বন্দর, ইপিজেড, ইকোনমিক জোনসহ প্রায় ৫৩টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। বন্দরের বহি:নঙর, হারবাড়িয়া, ভ্যাসক্রিকি ও জেটি এলাকায় পন্য বোঝাই বানিজ্যিক জাহাজ থেকে পন্য খালাস-বোঝাই কাজ চললেও নৌচলাচল বন্ধ থাকায় পন্য নিয়ে যেতে পারছেনা লাইটার বা কার্গো জাহাজ। তাই দুই দিন যাবত দেশের বিভিন্ন জেলা বা বিভাগীয় শহরে যাওয়ার জন্য পশুর চ্যানেলে অবস্থান করে আছে পন্য বোঝাই কয়েক শ’ বোট,কার্গো ও লাইটার জাহাজ।

হরতালে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে মোংলা নদী পারাপার ও নৌ-চলাচল। অনেকটা বিচ্ছিন্ন ছিলো পৌর শহরের সাথে বন্দরের জনজীবন। মোংলা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছিল আন্দোলনকারীরা। বন্ধ ছিলো ভ্যান ও রিক্সাসহ অন্যান্য যান চলাচল, স্কুলে অনুপস্থিত ছিলো শিক্ষার্থীরা। গাড়ী না চলায় ভোগান্তিতে পড়ে নিম্ন আয়ের মানুষ ও পথচারীরা। অন্যদিকে, সড়ক পথ বন্ধ থাকায় বন্দর, ইপিজেড ও বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের সামনে পন্য খালাসের জন্য অপেক্ষায় ছিলো শত শত ট্রাক ও লরি, পন্য বোঝাই করে অলস সময় পার করে ট্রাকগুলো।

গত বুধ থেকে শুরু করে ১১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মোংলা-খুলনা সড়ক ও মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে টায়ার জ¦ালিয়ে ও গাছের গুড়ি ফেলে ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রাখে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। মোংলা-খুলনা মহাসড়কের বাসষ্ট্যান্ড, দ্বিগরাজ, মোংলা কলেজ মোড়, হাসপাতাল ঘেট, শেরাবুনিয়া, কানাইনগর, কুমারখালী ও মোংলা নদী পারাপার ঘাটসহ প্রায় ১৮টির গুরুত্বপুর্ণ পয়েন্টে ব্যারিকেড দিয়ে হরতাল পালন করছে সর্বদলীয় কমিটির। নদী থেকেও কোন নৌচলাচল করতে দেয়া হয়নি। ছেড়ে যায়নি দুর পাল্লার কোন বাস। বন্ধ রাখা হয়েছে ইপিজেডের গামেন্টস, মোংলা উপজেলার ও পৌরসভারসহ সরকারী-বেসরকারী অফিস ও সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। নদী পার হতে না পেরে গার্মেন্টস কর্মীরাও কর্মস্থালে যায়নি, স্কুলে যায়নি শিক্ষার্থীরা। ব্যাবসায়ীরা তাদের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে হরতার অবরোধ পালন করছে।

বাগেরহগাট জেলা সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতা কৃষিবিদ শামিমুর রহমান শামিম বলেন, গেল ৩০ জুলাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোংলা-রামপালসহ বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কেটে অন্যত্র নেয়ার প্রস্তাব দিলে ক্ষোভে ফেটে পরে বাগেরহাটবাসী। দেয়া হচ্ছে একের পর এক আন্দেলনের কর্মসুচি। নির্বাচন কমিশন মোংলা বন্দরকে অচল করে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে। খুলনাসহ দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চল মানে মোংলা সমুদ্র বন্দর। এ বন্দর না থাকলে এ অঞ্চলে কিছু থাকবে না। তাই বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় ঘুরে দাড়িয়েছে এ সমুদ্র বন্দরটি। যদি নির্বাচন কমিশন তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসে শনিবার থেকে আরো কঠোর কর্মসুচি ঘোষনা করা হবে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন